ডিসপোজেবল জিনিস বাদ দিয়ে পরিবেশ বাঁচানোর সহজ উপায়গুলো জানেন তো? না জানলে বিরাট লস!

webmaster

**A vibrant scene depicting a woman using a cloth bag at a bustling market in Bangladesh. The background shows vendors selling fresh produce, and there are reusable steel water bottles visible. The overall feeling should be positive and eco-friendly.**

একবার ভাবুন তো, প্রতিদিন আমরা কত রকমের জিনিস ব্যবহার করে ফেলি, যেগুলো একবার ব্যবহারের পরেই আর কাজে লাগে না? প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের প্যাকেট, থালা-বাসন – এই সব জিনিস পরিবেশের ওপর কী সাংঘাতিক প্রভাব ফেলে, তা আমরা হয়তো সবসময় খেয়াল করি না। কিন্তু সত্যি বলতে, এই একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসগুলো আমাদের গ্রহের জন্য একটা বড় বিপদ ডেকে আনছে।আমি নিজের চোখেই দেখেছি, আমার শহরের পাশে একটা নদী ছিল, যেটা একসময় স্বচ্ছ জলের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন সেখানে গেলে মনে হয় যেন আবর্জনার স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। চারিদিকে শুধু প্লাস্টিক আর পলিথিন। এই দৃশ্যটা আমাকে খুব কষ্ট দেয়।আসলে, এই সমস্যাটা আমাদের নিজেদেরই তৈরি করা। আমরা যদি একটু সচেতন হই, তাহলেই কিন্তু অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারি। একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসের বদলে যদি আমরা বিকল্প কিছু ব্যবহার করি, তাহলে পরিবেশের ওপর চাপ অনেক কমবে। বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ, কাপড়ের ব্যাগ, স্টিলের জলের বোতল – এরকম অনেক কিছুই তো ব্যবহার করা যায়, তাই না?

বর্তমানে, পরিবেশ সচেতনতা বাড়ছে, আর মানুষজনও ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে যে আমাদের অভ্যাস বদলানো কতটা জরুরি। বিভিন্ন কোম্পানিও এখন পরিবেশ-বান্ধব জিনিস তৈরি করতে শুরু করেছে। এটা একটা ভালো লক্ষণ। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে আমরা আরও অনেক নতুন বিকল্প খুঁজে পাবো।আসুন, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জন করতে এবং পরিবেশকে বাঁচাতে। এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোই একদিন বড় পরিবর্তন আনবে।এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য নিচের প্রবন্ধে আলোচনা করা হলো।

একবার ব্যবহারযোগ্য বিকল্প: পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার

সহজ - 이미지 1

১. পরিবেশ বান্ধব বিকল্পের ব্যবহার

একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্রের সবচেয়ে বড় বিকল্প হল পরিবেশ বান্ধব জিনিস ব্যবহার করা। যেমন, প্লাস্টিকের বোতলের বদলে স্টিলের বোতল, পলিথিনের ব্যাগের বদলে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। আমি যখন প্রথম কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করা শুরু করি, তখন একটু অসুবিধা হত, কারণ অভ্যাস ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে দেখলাম এটা পরিবেশের জন্য কত ভালো। এখন আমি সবসময় চেষ্টা করি কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করতে। শুধু তাই নয়, বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ, কাঠের চামচ, এবং অন্যান্য পরিবেশ বান্ধব জিনিসও ব্যবহার করা শুরু করেছি। এগুলো দেখতেও সুন্দর, আর পরিবেশের জন্যও ভালো। আমার মনে হয়, আমাদের সবারই উচিত এই ধরনের জিনিস ব্যবহার করা।

২. পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহার

পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহার – এই দুটো বিষয় আমাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেক জিনিসকেই পুনর্ব্যবহার করতে পারি। যেমন, পুরনো কাগজ দিয়ে নতুন জিনিস তৈরি করা, প্লাস্টিক রিসাইকেল করে অন্য কাজে লাগানো। আমি আমার বাড়ির পুরনো খবরের কাগজ আর বোতলগুলো রিসাইকেল করার জন্য আলাদা করে রাখি। এছাড়া, অনেক জিনিস আছে যেগুলো আমরা বারবার ব্যবহার করতে পারি। যেমন, কাঁচের বোতল, পুরনো জামাকাপড়। পুরনো জামাকাপড় দিয়ে সুন্দর ব্যাগ বা অন্য কিছু তৈরি করা যায়। আমি নিজে কয়েকটা পুরনো শাড়ি দিয়ে ব্যাগ বানিয়েছি, যেগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। এই অভ্যাসগুলো আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতে অনেক সাহায্য করে।

৩. ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উদাহরণ

আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জন করাটা প্রথমে একটু কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু যখন আপনি এর উপকারিতাগুলো দেখবেন, তখন আপনার ভালো লাগবে। আমি যখন প্রথম প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছিলাম, তখন মনে হয়েছিল যেন একটা ঝামেলা কমে গেল। এখন আমি সবসময় নিজের জলের বোতল সাথে রাখি, আর যেখানেই যাই, সেটাতেই জল ভরে নিই। এটা শুধু পরিবেশের জন্য ভালো নয়, আমার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। কারণ প্লাস্টিকের বোতলের জল শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

প্লাস্টিক দূষণ কমাতে আমাদের ভূমিকা

১. ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধি

প্লাস্টিক দূষণ কমাতে হলে প্রথমে আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে। আমরা যদি নিজেরা সচেতন না হই, তাহলে অন্যকে সচেতন করতে পারব না। আমি দেখেছি, অনেক মানুষ রাস্তায় যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলে দেয়। এটা খুবই খারাপ একটা অভ্যাস। আমাদের উচিত এই অভ্যাস ত্যাগ করা এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করা। আমি আমার বন্ধুদের এবং পরিবারের সদস্যদের সবসময় বলি, প্লাস্টিক ব্যবহার না করতে এবং যেখানে সেখানে না ফেলতে।

২. সামাজিক প্রচারে অংশগ্রহণ

ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি সামাজিক প্রচারেও অংশগ্রহণ করা উচিত। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে কাজ করে। তাদের সাথে যুক্ত হয়ে আমরা নিজেদের এলাকার মানুষকে সচেতন করতে পারি। আমি কয়েকটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে কাজ করি, যারা বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে গিয়ে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করে। এছাড়া, আমরা রাস্তায় পোস্টার লাগাই এবং লিফলেট বিতরণ করি, যাতে মানুষজন সচেতন হয়।

৩. সরকারি উদ্যোগকে সমর্থন

সরকারও প্লাস্টিক দূষণ কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের উচিত সেই উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করা এবং সরকারের নিয়মকানুন মেনে চলা। সরকার যদি প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে, তাহলে আমাদের উচিত সেটা মেনে চলা এবং বিকল্প কিছু ব্যবহার করা। আমি মনে করি, সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে।

পরিবেশ বান্ধব জীবনযাপন: ছোট পদক্ষেপ, বড় প্রভাব

১. খাদ্য এবং পানীয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন

আমাদের খাদ্য এবং পানীয়ের অভ্যাস পরিবর্তন করে আমরা পরিবেশের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারি। যেমন, ফাস্ট ফুডের প্যাকেট এবং প্লাস্টিকের বোতলের পানীয় বর্জন করে আমরা পরিবেশকে বাঁচাতে পারি। আমি এখন চেষ্টা করি বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে এবং নিজের জলের বোতল সাথে নিয়ে যেতে। এছাড়া, বাজারের ব্যাগ হিসেবে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করি। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক উপকারী।

২. পোশাক এবং ফ্যাশনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন

পোশাক এবং ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও আমরা পরিবেশ বান্ধব হতে পারি। সিনথেটিক কাপড়ের বদলে প্রাকৃতিক তন্তু যেমন সুতি, লিনেন ব্যবহার করা উচিত। আমি এখন বেশিরভাগ সময় সুতির পোশাক পরি। এছাড়া, পুরনো জামাকাপড় ফেলে না দিয়ে সেগুলো দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা যায়। আমি আমার পুরনো জিন্স দিয়ে একটা ব্যাগ বানিয়েছি, যেটা দেখতে খুবই সুন্দর।

৩. দৈনন্দিন জীবনে ছোট পরিবর্তন

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তন এনেও আমরা পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি। যেমন, দাঁত ব্রাশ করার সময় কল বন্ধ রাখা, অপ্রয়োজনে লাইট এবং ফ্যান বন্ধ রাখা, এবং কম জল ব্যবহার করা। আমি যখন দাঁত ব্রাশ করি, তখন কল বন্ধ রাখি। এছাড়া, আমি চেষ্টা করি বৃষ্টির জল ধরে রাখতে এবং সেটা বাগানে ব্যবহার করতে। এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক বড় অবদান রাখতে পারে।এখানে কিছু পরিবেশ-বান্ধব বিকল্পের উদাহরণ দেওয়া হলো:

একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প সুবিধা
প্লাস্টিকের বোতল স্টিলের বোতল, কাঁচের বোতল দীর্ঘস্থায়ী, স্বাস্থ্যকর, পুনর্ব্যবহারযোগ্য
পলিথিনের ব্যাগ কাপড়ের ব্যাগ, পাটের ব্যাগ টেকসই, পরিবেশ-বান্ধব, বারবার ব্যবহার করা যায়
প্লাস্টিকের থালা-বাসন বাঁশের থালা-বাসন, কাঠের থালা-বাসন প্রাকৃতিক, পুনর্ব্যবহারযোগ্য, পরিবেশ-বান্ধব
প্লাস্টিকের স্ট্র বাঁশের স্ট্র, কাগজের স্ট্র পরিবেশ-বান্ধব, পুনর্ব্যবহারযোগ্য
প্লাস্টিকের টুথব্রাশ বাঁশের টুথব্রাশ প্রাকৃতিক, পুনর্ব্যবহারযোগ্য

আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ পৃথিবী

১. শিশুদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি

আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সবুজ পৃথিবী উপহার দিতে হলে শিশুদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করতে হবে। তাদের শেখাতে হবে কেন পরিবেশ রক্ষা করা জরুরি এবং কিভাবে তারা পরিবেশ বান্ধব জীবনযাপন করতে পারে। আমি আমার বাচ্চাদের সবসময় বলি, গাছ লাগাতে এবং পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে। এছাড়া, আমি তাদের বিভিন্ন পরিবেশ বিষয়ক গল্প এবং কবিতা পড়ে শোনাই, যাতে তারা পরিবেশের গুরুত্ব বুঝতে পারে।

২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ শিক্ষা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান দেওয়া উচিত এবং তাদের পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব বোঝানো উচিত। আমি মনে করি, প্রতিটি স্কুলে একটি পরিবেশ ক্লাব থাকা উচিত, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

৩. সম্মিলিত প্রচেষ্টা

একটি সবুজ পৃথিবী গড়তে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। সরকার, সামাজিক সংগঠন, এবং সাধারণ মানুষ – সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা যদি সবাই মিলে চেষ্টা করি, তাহলে অবশ্যই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর এবং সবুজ পৃথিবী তৈরি করতে পারব।

পরিবেশ সুরক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার

১. স্মার্ট এবং পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি

বর্তমানে পরিবেশ সুরক্ষায় বিভিন্ন স্মার্ট এবং পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন, সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ, এবং জলবিদ্যুৎ। এই প্রযুক্তিগুলো পরিবেশের জন্য খুবই উপযোগী এবং এগুলো ব্যবহার করে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারি। আমি আমার বাড়িতে সোলার প্যানেল লাগিয়েছি, যা দিয়ে আমি আমার বাড়ির অনেক কাজ চালাই। এটা শুধু পরিবেশের জন্য ভালো নয়, আমার বিদ্যুৎ বিলও অনেক কমে গেছে।

২. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা পরিবেশ দূষণ কমাতে পারি। যেমন, কম্পোস্টিং, ইনসিনারেটর, এবং রিসাইক্লিং। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে আমরা বর্জ্য থেকে মূল্যবান জিনিস তৈরি করতে পারি এবং পরিবেশকে পরিষ্কার রাখতে পারি। আমি আমার বাড়ির সব জৈব বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট তৈরি করি, যেটা আমি আমার বাগানে ব্যবহার করি।

৩. পরিবেশ নিরীক্ষণের জন্য সেন্সর এবং ডেটা বিশ্লেষণ

পরিবেশ নিরীক্ষণের জন্য সেন্সর এবং ডেটা বিশ্লেষণ ব্যবহার করে আমরা দূষণের মাত্রা জানতে পারি এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা জানতে পারি কোথায় দূষণ বেশি হচ্ছে এবং কিভাবে সেটা কমানো যায়। আমি মনে করি, এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় আরও বেশি কার্যকরী হতে পারব।

একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জনের পথে বাধা এবং সমাধান

১. অভ্যাস পরিবর্তন

একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জন করার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হল আমাদের অভ্যাস। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জিনিসগুলো ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, তাই হঠাৎ করে এটা ছেড়ে দেওয়া কঠিন। তবে, ধীরে ধীরে চেষ্টা করলে এই অভ্যাস পরিবর্তন করা সম্ভব। আমি প্রথমে খুব অল্প করে শুরু করেছিলাম, যেমন প্লাস্টিকের বোতলের বদলে স্টিলের বোতল ব্যবহার করা। ধীরে ধীরে আমি অন্যান্য জিনিসও পরিবর্তন করি।

২. বিকল্পের অভাব

অনেক সময় একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসের বিকল্প পাওয়া যায় না, যার কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে সেগুলো ব্যবহার করে। তবে, বর্তমানে বাজারে অনেক পরিবেশ বান্ধব বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের উচিত সেই বিকল্পগুলো খুঁজে বের করা এবং ব্যবহার করা। আমি যখন প্রথম বাঁশের টুথব্রাশ ব্যবহার করতে শুরু করি, তখন এটা আমার কাছে নতুন ছিল, কিন্তু এখন আমি এটা ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

৩. সচেতনতার অভাব

অনেক মানুষ পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতন নয়, যার কারণে তারা একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করে। আমাদের উচিত তাদের সচেতন করা এবং পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব বোঝানো। আমি আমার এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালাই, যেমন পথনাটক এবং আলোচনা সভা।আমি আশা করি, এই প্রবন্ধটি পড়ার পরে আপনারা একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জন করতে উৎসাহিত হবেন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসবেন। একসাথে কাজ করলে আমরা অবশ্যই আমাদের পৃথিবীকে একটি সুন্দর এবং সবুজ গ্রহে পরিণত করতে পারব।

উপসংহার

আমরা সবাই যদি একটু চেষ্টা করি, তাহলে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি। একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বর্জন করে, পুনর্ব্যবহার করে এবং পরিবেশ বান্ধব জীবনযাপন করে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরি করতে পারি। আসুন, সবাই মিলেমিশে কাজ করি এবং আমাদের পৃথিবীকে বাঁচাই।

মনে রাখবেন, ছোট ছোট পদক্ষেপই বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আপনার সামান্য সচেতনতাই পরিবেশের জন্য অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। তাই, আজ থেকেই শুরু করুন পরিবেশ বান্ধব জীবনযাপন।

দরকারী তথ্য

1. পরিবেশ বান্ধব পণ্য চেনার উপায়: পরিবেশ বান্ধব পণ্যের গায়ে সাধারণত গ্রিন লোগো বা রিসাইকেল চিহ্ন থাকে।

2. কম্পোস্টিং করার সহজ উপায়: বাড়ির জৈব বর্জ্য একটি পাত্রে জমা করে, তার সাথে মাটি ও শুকনো পাতা মিশিয়ে নিয়মিত জল দিন। কিছুদিনের মধ্যেই কম্পোস্ট তৈরি হয়ে যাবে।

3. প্লাস্টিক রিসাইকেল করার পদ্ধতি: প্লাস্টিক রিসাইকেল করার জন্য আপনার এলাকার রিসাইক্লিং সেন্টারে যোগাযোগ করুন।

4. পরিবেশ বান্ধব কাপড় চেনার উপায়: সুতি, লিনেন, পাট ইত্যাদি প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি কাপড় পরিবেশ বান্ধব।

5. জল সংরক্ষণের সহজ উপায়: বৃষ্টির জল ধরে রেখে সেটা বাগানে ব্যবহার করুন অথবা ঘর মোছার কাজে লাগান।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার করে পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প ব্যবহার করুন।

পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে দূষণ কমানো সম্ভব।

ব্যক্তিগত সচেতনতা এবং সামাজিক প্রচারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা যায়।

খাদ্য, পোশাক এবং দৈনন্দিন জীবনে ছোট পরিবর্তন এনে পরিবেশ বান্ধব জীবনযাপন করা যায়।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ পৃথিবী গড়তে শিশুদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস বলতে কী বোঝায়?

উ: একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস হলো সেই সব জিনিস যা একবার ব্যবহারের পরেই ফেলে দেওয়া হয়। যেমন, প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিনের ব্যাগ, কাগজের কাপ ইত্যাদি। এগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ এগুলো সহজে পচে না এবং দূষণ বাড়ায়।

প্র: পরিবেশের ওপর একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসের প্রভাব কী?

উ: একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিস পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এগুলো মাটি ও জল দূষণ করে, বন্যপ্রাণীদের জীবন বিপন্ন করে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। আমি নিজের চোখে দেখেছি, কিভাবে প্লাস্টিক জমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।

প্র: একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসের বিকল্প কী কী হতে পারে?

উ: একবার ব্যবহারযোগ্য জিনিসের অনেক ভালো বিকল্প আছে। যেমন, প্লাস্টিকের বোতলের বদলে রিইউজেবল জলের বোতল, পলিথিনের ব্যাগের বদলে কাপড়ের ব্যাগ, একবার ব্যবহারযোগ্য থালার বদলে স্টিলের থালা ব্যবহার করা যায়। বাঁশের তৈরি টুথব্রাশও এখন খুব জনপ্রিয়। আমি নিজে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করি এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করি।

📚 তথ্যসূত্র